Breaking news

গোপনে নারী সহকর্মীর বাসায় থাকা নিয়েই যত সন্দেহ
গোপনে নারী সহকর্মীর বাসায় থাকা নিয়েই যত সন্দেহ

গোপনে নারী সহকর্মীর বাসায় থাকা নিয়েই যত সন্দেহ

৩ ফেব্রুয়ারি বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে ফেডারেশন থেকে ছুটি নেন জাতীয় তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় কামরুল ইসলাম (২৪)। এরপর ক্রীড়া পরিষদের ক্যাম্প থেকে তিনি বের হয়ে যান। কিন্তু বাড়িতে না গিয়ে, গোপনে রাজধানীর বসিলায় নারী সহকর্মী ও তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় প্রতিভা সরকারের বাসায় ছিলেন তিনি। সেখানেই মৃত্যু হয় কামরুলের। গোপনে সহকর্মীর বাসায় অবস্থান নিয়ে পরিবার, ফেডারেশন ও পুলিশের মনে সন্দেহ ঘনিভূত হচ্ছে। ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ওই নারীকে।

শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে আমাদের প্রশিক্ষক প্রতিভা সরকার আমাকে ফোন করে জানায়, তার বাসায় কামরুল মারা গেছে। আমি হতভম্ব হয়ে যাই। স্টাফদের দ্রুত ঘটনাস্থলে যেতে বলি। তারা সেখানে যায়। আমরাও সবাই সকালে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাই। সঙ্গে সঙ্গে আমরা চট্টগ্রামে কামরুলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তার ভাইকে প্লেনে করে ঢাকায় নিয়ে আসি। এরপর কামরুলের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।’

 

তিনি বলেন, ‘৩ ফেব্রুয়ারি ছেলেটি আমাদের কাছ থেকে বাড়ি যাওয়ার কথা বলে ছুটি নেয়। সকালেই সে ক্রীড়া পরিষদের ক্যাম্পে থেকে চলে যায়। কিন্তু সে যে বাড়ি যায়নি, তা আমরা কেউ জানতাম না। প্রতিভার বাসায় ছিল ও। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।’

 

মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘কামরুল আত্মহত্যা করার মতো ছেলে নয়। আমাদের কাছে তার মৃত্যু স্বাভাবিক লাগেনি। প্রভাতীর সঙ্গেও তার বোঝাপড়া ছিল।’

‘কামরুল ইসলাম ১৩-১৪ বছর ধরে আমাদের সঙ্গে ছিলেন। বলা যায় ছোটবেলা থেকেই আছে। খুব ভালো খেলোয়াড় ছিলেন। জাতীয় পর্যায়ে স্বর্ণজয়ী। বাংলাদেশ আনসার থেকে নিয়মিত ভাতাও পেতেন।’

শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ভোরে তায়কোয়ান্দো খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষক প্রতিভা সরকার তার বসিলার বাসা থেকে কামরুলকে অচেতন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। এসময় সঙ্গে তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের আরো দুজন ছিলেন। যাদের খবর দিয়েছিল প্রতিভা নিজেই।

প্রতিভা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার আগে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বসে সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে তার বসিলার বাসায় যান কামরুল ইসলাম। রাতের খাবার খেয়ে কামরুল অন্য একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন। এরপর ভোররাতে কোনও একসময় দরজার ফাঁক দিয়ে প্রতিভা দেখতে পান কামরুল সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। এরপর তিনি নিজেই বটি দিয়ে গলার ফাঁস কেটে দেন। পরে তিনি ফেডারেশনের কয়েকজনকে জানান। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাজারীবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে কামরুল ও প্রতিভার মধ্যে ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং ছিল। তবে সম্প্রতি তা কোন পর্যায়ে ছিল, তা তদন্ত করছি।’

কামরুলের বাড়ি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার দক্ষিণ শিকলবাহা এলাকায়। তার বাবা আবদুল করিম কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। বড় ভাই আহমদ আল মামুন,‘আমরা ফেডারেশনের সহযোগিতায় লাশ বাড়িতে নিয়ে এসেছি। এখানে শনিবার রাতে দাফন করা হয়েছে। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে সত্য বের করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জানতাম কামরুল ঢাকায় ক্যাম্পে রয়েছে। প্রতিভার কাছে ছিল কেন তা জানি না।’

তায়কোয়ান্দো ফেডারেশনের জাতীয় দলের সহকারী কোচ পলাশ মিয়া হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য বুধবার দুই দিনের ছুটি নিয়েছিলেন কামরুল। এরপর তার সঙ্গে আর যোগাযোগ হয়নি।’


Published: 2021-06-07 18:56:44   |   View: 1308   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow