Breaking news

‘আনসার আল ইসলাম’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা
‘আনসার আল ইসলাম’কে  নিষিদ্ধ ঘোষণা

‘আনসার আল ইসলাম’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা

উগ্রপন্থী সংগঠন আনসার আল ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, আনসার আল ইসলাম নামের জঙ্গি দল/সংগঠন ঘোষিত কার্যক্রম দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থি। সংগঠনটির কার্যক্রম জন নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে বিবেচিত হওয়ায় বাংলাদেশে এর কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানায়, জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামকে নিষিদ্ধ করার জন্য গত বছরের শেষের দিকে পুলিশ সদর দফতর থেকে একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়। প্রজ্ঞাপনে সংগঠনটিকে দেশের জননিরাপত্তার জন্য  হুমকি উল্লেখ করা হয়।

রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণলয়ের জননিরাপত্তার বিভাগ এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়েছে।

একাধিক ব্লগার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’কে  নিষিদ্ধ ঘোষণা করার কথা জানিয়ে গত বছরের আগস্টে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটি) প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ হলে তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ হবে। একইসঙ্গে এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের মনোবলেও চিড় ধরবে। এছাড়া তাদের নতুন করে সদস্য সংগ্রহ প্রক্রিয়া আটকানো সহজ হবে।  এই সংগঠনের নেতাকর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিতে কেউ সাহস পাবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব  কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন করে ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে। এখন এটি মনিটরিং করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা কার্যক্রম পরিচালনা করলে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এর আগে ২০১৫ সালের ২৫ মে পুলিশ সদর দফতরের এক সুপারিশের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওইসময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক অধিশাখা থেকে জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সন্ত্রাসবিরোধী (সংশোধন) আইনের ১৮(২) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত থাকার কারণে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।

গত দুই বছর অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগার এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হত্যার ঘটনায় আনসার আল ইসলামের নাম এসেছে। নানা হত্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দায়ও স্বীকার করেছে সংগঠনটি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মধ্যে বিশেষ করে ফেসবুকে ব্যাপক প্রচার চালায় আনসার আল ইসলাম। তারা মধ্যপ্রাচ্য এবং পারস্যের নানা দেশের ঘটনা তুলে ধরে বাংলাদেশিদেরকেও উগ্রপন্থায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, বিদেশিদের কাছে দায় স্বীকারের বার্তা পৌঁছানোর জন্য বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজি ভাষাতেও বার্তা দেয় সংগঠনটি। ইন্টারনেটে সামাজিক যোগাযোগের যত মাধ্যম সবগুলোতেই তারা সক্রিয়।

আনসার আল ইসলামের আগেও উপপন্থা ছড়ানোর অভিযোগে ছয়টি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। এর মধ্যে সবশেষ নিষিদ্ধ করা হয় ব্লগার রাজীব হত্যায় নাম আসা আনসারউল্লাহ বাংলাটিমকে। এর আগেও নানা সময় জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ (জেএমবি), জাগ্রত মুসলিম জনতা বাংলাদেশ (জেএমজেবি), হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশ (হুজি), শাহাদাৎ-ই আল-হিকমা ও হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

অবশ্য নিষিদ্ধ করলেও এসব সংগঠনের কর্মীরা থেমে নেই। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ব্যাপক তাণ্ডব চালানো জেএমবি ও জেএমজেবির তৎপরতা মাঝে কমে আসলেও সম্প্রতি আবার মাথাচাড়া দিয়েছে জেএমবি। হিযবুত তাহরীরেরও গোপন তৎপরতা চালু থাকার বিষয়েও তথ্য প্রমাণ রয়েছে। প্রায়ই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে ধরাও পড়ছে এসব সংগঠনের কর্মীরা।

নিষিদ্ধ সংগঠনের গোপন তৎপরতার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব  কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দেখুন অন্তরালে অনেক ঘটনাই ঘটে। তবে ধরা পড়লে তো ব্যবস্থা নেয়াই হয়।

Published: 2021-06-25 10:27:37   |   View: 1400   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow