Breaking news

আগামী নির্বাচনে ৪৩ জেলার ৮৫ আসনে নতুন মুখ
আগামী নির্বাচনে ৪৩ জেলার ৮৫ আসনে নতুন মুখ

আগামী নির্বাচনে ৪৩ জেলার ৮৫ আসনে নতুন মুখ

নির্বাচনী প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বগুড়ার আদমদীঘিতে জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি ভোট প্রার্থনা করে আ’লীগের প্রার্থীদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি সংসদীয় দলের সভায় প্রধানমন্ত্রী সংসদ সদস্যদেরকে আগামী নির্বাচনের জন্য ভোটারের দ্বারে যাওয়ার নির্দেশ দেন। আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই আগামী নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার কাজ শুরু করা হয়েছে। এ জন্য সরকারি ও দলীয় গোয়েন্দাদের একাধিক টিম কাজ করছে। এসব গোয়েন্দা প্রতিবেদন সরাসরি যাবে দলের হাই কমান্ডের কাছে। ইতোমধ্যে বর্তমান এমপি ও আসনভিত্তিক মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আমলনামাভিত্তিক একাধিক প্রতিবেদন জমাও পড়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। সূত্র মতে, জমা পড়া গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে দেখা যায়-একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না বর্তমান সংসদের অর্ধশত এমপি। 

কর্মী বিচ্ছিন্ন, উগ্র আচরণ, হাইব্রিড লালন ও লুটপাটে জড়িতদের বদলে খোঁজ হচ্ছে কর্মীবান্ধব, জনসম্পৃক্ত, এলাকায় গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। সূত্র মতে, ইতোমধ্যে যেসব গোয়েন্দা তথ্য পাওয়া গেছে তাতে আগামী নির্বাচনে ৪৩ জেলার ৮৫ আসনে নতুন মুখ দেখা যেতে পারে। যদিও শেষ মুহূর্তে দলীয় প্রার্থিতা অনেকাংশে নির্ভর করে প্রতিপক্ষের প্রার্থী মনোনয়নের ওপর।

পঞ্চগড়ের দুটি আসনের একটিতে দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তন হচ্ছে বলে সূত্র বলেছে। ঠাকুরগাঁওয়ে তিনটি আসনের দুটি আওয়ামী লীগের ও একটি ওয়ার্কার্স পার্টির। একজন এমপির বিরুদ্ধে দখলবাজির অভিযোগ ওঠায় দলকে বিব্রত হতে হয়েছে। এ জেলায় বাদ পড়তে পারেন একজন এমপি। 
দিনাজপুরের ছয়টি আসনের সবই আওয়ামী লীগের। এ জেলায় দুজন মন্ত্রী। ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময় শেখ হাসিনা তখন কারাগারে, প্রয়াত জিল্লুর রহমান ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দলের একটি বিশেষ বর্ধিত সভা ডেকেছিলেন। ওই সভায় প্রথম বক্তা এ জেলার এক নেতা সংস্কারপন্থী বক্তব্য রেখেছিলেন। শেখ হাসিনাকে মাইনাসের পক্ষে কথা বলেছিলেন। তিনি এখন মন্ত্রী। আবার তার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুর সম্পত্তি দখলের অভিযোগও আছে। নানা কর্মের মাধ্যমে তিনি বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া জেলায় পরিবর্তন আসতে পারে আরেকটি আসনে।

নীলফামারীতে বাদ পড়তে পারেন দুই এমপি। রংপুরে পরিবর্তন হচ্ছে দুটি আসনে। কুড়িগ্রামের চারটি আসনই এখন জাতীয় পার্টির। আগামী নির্বাচনে দুটি আসন নেবে আওয়ামী লীগ। গাইবান্ধায় পরিবর্তন আসতে পারে দুটি আসনে। বগুড়ায় নতুন মুখ আসতে পারে তিনটি আসনে, তবে পুরনোরা কেউ বাদ পড়ছেন না। নওগাঁর ছয়টি আসনের পাঁচটি আওয়ামী লীগের, একটি স্বতন্ত্র। আগামী নির্বাচনে বার্ধক্যজনিত কারণে বাদ পড়তে যাচ্ছেন একজন এবং বিতর্কিত ও জনবিচ্ছিন্নতার কারণে বাদ পড়ছেন আরেকজন। রাজশাহীতে নতুন মুখ আসতে পারেন দুটি আসনে। নাটোরে বাদ পড়তে যাচ্ছেন একজন। এখানে মন্ত্রীর বিএনপিপন্থী আত্মীয়-স্বজনের কারণে অবস্থান নড়বড়ে হলেও হয়তো পার পেতে পারেন তিনি। সিরাজগঞ্জের চারটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে। তাদের মধ্যে দুজন জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন, বাকি দুজনের বিরুদ্ধে আছে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ। তাদের এলাকায় আছে প্রবল বিরোধী পক্ষ। পাবনাতে একজন বাদ পড়তে পারেন বয়সের কারণে, আরেকজন নিজে ও তার ভাই এলাকায় ব্যাপকভাবে বিতর্কিত। 

মেহেরপুর ও কুষ্টিয়ায় দুটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে। চুয়াডাঙ্গায় বদল হচ্ছে একটি আসন। ঝিনাইদহ জেলায় নতুন প্রার্থী আসছেন তিনটি আসনে। যশোরে চরমভাবে এলাকায় বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন তিন এমপি। তাদের দুজন বিতর্কিত লুটপাটের কারণে, আরেকজন পুলিশ দিয়ে এলাকার দলীয় প্রতিপক্ষের সমর্থিত নেতাকর্মীদের অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে। যশোরে প্রায় অর্ধশত দলীয় নেতাকর্মী পঙ্গু হয়েছেন পুলিশি নির্যাতনে, এর পেছনে আছেন একজন এমপি। মাগুরায় পরিবর্তন হচ্ছে একটি আসনে। খুলনায় নতুন মুখ আসছেন তিনটি আসনে। এদের একজন চরমভাবে বিতর্কিত হয়েছেন এক প্রতিবেশীর বাড়ির প্রবেশমুখে দেয়াল নির্মাণ করার ঘটনায়। আরেকজন ব্যাপক লুটপাটে মেতেছেন। তিনি এক সময় ছিলেন স্কুলশিক্ষক। এখন মন্ত্রী। শহরের একটি আসনে পরিবর্তন আসতে পারে বার্ধক্যজনিত কারণে।

সাতক্ষীরায় আওয়ামী লীগের তিন এমপির মধ্যে শ্যামনগর আসনের এমপি জগলুল হায়দার নিবিড়ভাবে এলাকায় জনসাধারণের সঙ্গে লেগে আছেন। তার বিরুদ্ধে অসততার কোনো অভিযোগ নেই বলে একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে দেখা যায়। অন্য দুই এমপির বিরুদ্ধে আছে গণবিছিন্নতার অভিযোগ, তাদের মনোনয়ন অনিশ্চিত। 

পটুয়াখালী ও বরিশালে একটি করে আসনে পরিবর্তন আসতে পারে। ঝালকাঠিতে  নিশ্চিত পরিবর্তন আসছে একটি আসনে। পিরোজপুরের একজন এমপি এবং তার পরিবারের লোকেরা পুরো জেলাকে জিম্মি করে রেখেছেন। জেলার আরেকটি আসনে পরিবর্তন হতে পারে বিগত নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী পরাজিত হওয়ার কারণে। 

টাঙ্গাইলে খান ও সিদ্দিকী পরিবার নেই আওয়ামী লীগে। বিএনপি-আওয়ামী লীগ মুখোমুখি হলে এখানে যেকোনো এক পরিবারের প্রয়োজন মনে করেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। আগামীতে রানার মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। আরেকটি আসনে কাদের সিদ্দিকী প্রার্থী হলে সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদলের কথা বলা হয়েছে। আরেকটি আসনে নতুন মুখ আসতে পারে বর্তমান এমপির বয়সের কারণে। ভোট ছাড়া নির্বাচিত আরেক এমপিকে দিয়ে আগামী নির্বাচনে বিএনপির মাহমুদুল হাসানকে ঠেকানো সম্ভব নয় বলে মনে করেন এলাকার নেতাকর্মীরা। একাধিক গোয়েন্দা প্রতিবেদনেও এরকম বলা হয়েছে। এ আসনে মুরাদ সিদ্দিকীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হলে নিশ্চিত হতে পারে আওয়ামী লীগ। 
জামালপুর ও শেরপুরে পরিবর্তন হচ্ছে একটি করে আসনে। ময়মনসিংহ জেলায় ১১টি আসন, তার চারটিতে জাতীয় পার্টি। সূত্র মতে, এবার জেলায় চারটি আসনে পরিবর্তন হতে যাচ্ছে। একটির এমপি যুদ্ধাপরাধ মামলায় জড়ানোর কারণে, একটি বার্ধক্যজনিত কারণে আর দুটিতে এমপিদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে। নেত্রকোনার ছয়টি আসনের মধ্যে তিনটিতে নতুন মুখ আসছে।

মুন্সীগঞ্জের একটি আসনে পরিবর্তন আসছে নিশ্চিত। সূত্র জানায়, ওই এমপির পরিবারের লোকেরা স্বাধীনতাবিরোধী হওয়ায় এবং গ্রামীণ ব্যাংকের ইউনূসের সঙ্গে জড়িত থাক

Published: 2021-06-08 13:53:45   |   View: 1437   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow