Breaking news

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ!
শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ!

শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে আওয়ামী লীগ!

সারাদেশের গত ৩২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। আর এর পেছনে একজনকেই দায়ী করছেন সবাই। তিনি হলেন নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খান।

শাজাহান খানের বাসায় বসেই পরিবহন ধর্মঘটের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর গণমানুষের মুখে মুখে ছিল তার নাম। এছাড়া কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতেও সন্দেহের তীর এখন তার দিকে। 

এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও দারুণ ক্ষুব্ধ। শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির মাঝে এ ধরনের একটি অসহনীয় ঘটনা এবং সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলানোর জন্য দলের নেতা হিসেবে শাজাহান খানের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না তা এখনো পরিষ্কার নয়। 

এ বিষয়ে দলের নেতারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের,  প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটকে অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন। কোন কোন আওয়ামী লীগ নেতা বলছেন, শাজাহান খানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। 

ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতারা ফেসবুক স্ট্যাটাসে নৌ-মন্ত্রী শাজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তারা বলছেন, শাজাহান খানের নির্দেশেই এ ধর্মঘট সারাদেশে ছড়িয়েছে। জনভোগান্তি চরমে উঠেছে। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। বিরোধী পক্ষ এটা নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ পাচ্ছে।

তারা আরও বলছেন, ধর্মঘটের নামে অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিবহনে হামলা এবং বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তাদের মতে, দেশে যখন শান্তি বিরাজ করছে, তখন গাবতলীতে রাতভর সহিংসতা হয়েছে। শুধু রাজধানীতে নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানেও অরাজকতা হয়েছে। সরকারের একজন মন্ত্রীর ইন্ধনে এ ধরনের কর্মকাণ্ড মানা যায় না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় বলেন, আদালত রায় দিয়েছেন, জনগণ দেয়নি। তাহলে জনগণকে কেন দুর্ভোগ পোহাতে হবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব এ অযৌক্তিক ধর্মঘট প্রত্যাহার করা উচিত।

বুধবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের ধর্মঘট প্রসঙ্গে বলেন, মানুষ কষ্ট পাচ্ছে, দুর্ভোগে আছে। এ সম্পর্কিত মন্ত্রী হিসেবে আমি দায় এড়াতে পারি না।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রাজ্জাক বলেন, এই অযৌক্তিক ধর্মঘট কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি (শাজাহান খান) একই সঙ্গে মন্ত্রী এবং শ্রমিক নেতা। তাই শ্রমিকদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু শ্রমিকরা যে সহিংসতা করছেন, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। 

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং দলের মুখপাত্র ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এ ধর্মঘট অযৌক্তিক এবং আদালত অবমাননা। বিশেষ কারও জন্য ভিন্ন আইন রাষ্ট্র করতে পারে না। 

শাজাহান খানকে উদ্দেশ করে ফেসবুকে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম লিখেছেন, আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর রক্তের দাগ আপনার হাতে এক সময় ছিল মাননীয় মন্ত্রী। আমরা সবাই ভুলে যাচ্ছিলাম। আপনি আবার শেখ হাসিনার শান্তির দেশে অবরোধ ডেকে মনে করিয়ে দিলেন আপনার অতীত। 

ছাত্রলীগের সহসভাপতি আহসান হাবিব তার ফেসবুকে লেখেন, শেখ হাসিনার হাতে দেশ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখন দালাল শ্রেণির শ্রমিক নেতারা দেশকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য ব্যস্ত। ওই সব দালাল শ্রমিক নেতাদের বলছি, দেশের পরিবেশ খারাপ করবেন না। 

শাজাহান খানকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক রফিকুল ইসলাম ফেসবুকে লিখেছেন, শাজাহান খানকে মন্ত্রিপরিষদ থেকে বাদ দেয়া হোক। আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হোক। তাহলে বাংলাদেশে এ ধরনের অবৈধ আন্দোলন ও ধর্মঘট বন্ধ হবে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার মিরপুরের এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতি তো আমরা চলতে দিতে পারি না। যাতে রাজপথগুলো পরিষ্কার থাকে, সে ব্যবস্থা অবশ্যই নেব। পুলিশের একটা র‌্যাকার ভেঙে ফেলেছে। একটা জিপের ওপর হামলা করতে গেছে। সেই সময় এক শ্রমিক আহত হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী চরম ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবেলা করছে।  


Published: 2021-06-18 12:26:58   |   View: 1491   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow