ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক এক গবেষণাকে পক্ষপাতদুষ্ট বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় টিআইবির সুশাসন বিষয়ক প্রতিবেদন যতটা গবেষণাধর্মী, তার চেয়ে বেশি রাজনৈতিক।’ তিনি বৃহস্পতিবার (১২ নভেম্বর) সরকারি বাসভবনে অনলাইন ব্রিফিংকালে এ অভিযোগ করেন।
প্রতিবেদনটি তীব্র নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘করোনায় করণীয় বিষয়ক গবেষণার সুপারিশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে বলা হয়েছে এবং আরও একধাপ এগিয়ে হয়রানিমূলক সব মামলা তুলে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সমাজ গবেষকরা টিআইবির এই প্রতিবেদনকে গবেষণা না বলে রাজনৈতিক প্রতিবেদন হিসেবেই আখ্যা দিয়েছেন।’
টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লিখিত স্বাস্থ্য খাতের অনিয়মের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আগেই নানান অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনও সংস্থা কিংবা কোনও দলের দাবি বা সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে নয়। সরকার নিজ উদ্যোগেই সব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করছে।’
টিআইবির প্রতিবেদনের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোথায় দুর্নীতি হয়েছে, কোথায় ঘুষ নেওয়া হয়েছে প্রণোদনা থেকে, সুনির্দিষ্টভাবে তার তালিকা দিলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে। সরকার এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে।’
টিআইবির গবেষণাকে উদ্দেশ্যমূলক অভিহিত করে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি বিশ্বে এক নতুন অভিজ্ঞতা। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। তার মধ্যে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশ সংক্রমণের আশঙ্কার চেয়ে অনেক ভালো আছে। শীতকালে সম্ভাব্য দ্বিতীয় তরঙ্গ মোকাবিলায় ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিশ্বসমাজ যখন করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রশংসা করছে তখন সরকারের ন্যূনতম একটি ভালো উদ্যোগও টিআইবির গবেষক দলের চোখে পড়েনি, যা খুবই দুঃখজনক। তাই এ গবেষণার উদ্দেশ্য এবং বিধেয় নিয়ে জনমনে অবিশ্বাস এবং প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। জনগণ মনে করে, এ গবেষণা সমাজ গবেষণার সুনির্দিষ্ট কাঠামোর আওতায় নয়, এটি রাজনৈতিক কিংবা ভিন্ন কোনও উদ্দেশ্যে পরিচালিত।’
এদেশের যত অর্জন তা আওয়ামী লীগের হাত ধরেই হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন, জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে আওয়ামী লীগ শক্তিশালী ও সাহসী ভূমিকা নিয়ে অধিকার হরণকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। রাজপথের আন্দোলনে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন অকুতোভয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা, দেশের প্রয়োজনে আত্মদান এ দলের নেতাকর্মীদের শিখিয়ে দিতে হয় না।’
‘বিএনপি করোনায় অসহায় মানুষের জন্য কী করেছে’, প্রশ্ন রেখে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে ছিলেন বলেই করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়নি এবং প্রাণও হারায়নি। যারা অন্ধকারের চোরাগলি, ষড়যন্ত্র ও হত্যা সন্ত্রাসের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে তারা ইতিহাসের কাঠগড়ায় কাপুরুষ।’