আগামী বুধবার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে বসবে এসব নিয়মিত বেঞ্চ।
সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত দুটি বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের অধস্তন আদালতে স্বাভাবিক বিচারকাজ শুরুর ছয় দিন পর উচ্চ আদালতেও সেই পথ খোলা হল।
হাই কোর্টের ৩৫টি ভার্চুয়াল বেঞ্চের মধ্যে ২৪টি দ্বৈত ও ১১টি একক বেঞ্চ রয়েছে। আর ১৮টি নিয়মিত বেঞ্চের মধ্যে দ্বৈত বেঞ্চ আছে ১৩টি, ৫টি একক বেঞ্চ।
নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে সারা দেশে ছুটি ঘোষণা করে। তার সঙ্গে মিল রেখে আদালতেও শুরু হয় ছুটি। সরকারের সাধারণ ছুটির সঙ্গে আদালতের সাধারণ ছুটিও বাড়তে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে ‘ভার্চুয়াল আদালতে’ শুনানির জন্য গত ৯ মে সরকার ‘আদালত কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার’ অধ্যাদেশ জারি করে; সংসদ যেটিকে পরে আইনে পরিণত করেছে।
পরদিন সর্বোচ্চ আদালতের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সে ‘ফুলকোর্ট’ সভা করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
ফুলকোর্ট সভার পর ওইদিনই অধস্তন আদালতে ভার্চুয়াল জামিন শুনানির নির্দেশ আসে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে। তার জন্য তিনটি বিশেষ প্র্যাকটিস নির্দেশনাও জারি করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
তার মধ্যে আপিল বিভাগ পরিচালনার জন্য্ ১৩ দফা, হাই কোর্ট পরিচালনার জন্য ১৫ দফা ও অধস্তন আদালত পরিচালনার জন্য ২১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই ‘প্র্যাকটিস নির্দেশনা’র আলোকেই ১১ মে থেকে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের অধস্তন ও ১২ মে থেকে উচ্চ আদালতে বিচারকাজ শুরু হয়।
সরকার ৩০ মে পর সাধারণ ছুটি আর না বাড়ালেও ভার্চুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে চলছিল দেশের অধস্তন আদালতের বিচারকাজ।
তবে ভাইরাস সংক্রমণ চলতে থাকলেও বিভিন্ন জেলায় আইনজীবীদের পক্ষ থেকে স্বাভাবিক সময়ের মতো বিচার চালানোর দাবি উঠে।
পরে গত ৩০ জুলাই অধস্তন আদালতে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে স্বাভাবিক বিচারকাজ পরিচালনার সিদ্ধান্ত আসে প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চার মাস পর গত ৫ আগস্ট থেকে দেশের অধস্তন আদালতে শুরু হয় স্বাভাবিক বিচারকাজ।
এর মধ্যে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে অবিলম্বে নিয়মিত আদালত চালুর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বিচারপতির কাছে গত ৮ জুলাই প্রস্তাব করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের বাৎসরিক ছুটিসহ সব আদালতের ডিসেম্বরের ছুটি বাতিলের দাবিও জানানো হয়।
পরে ২৬ জুলাই প্রধান বিচারপতির কাছে আবারও সেই প্রস্তাব পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি।
সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরাও দাবি জানান স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করে নিয়মিত আদালত পারিচালনার।
পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গত বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ফুলকোর্ট সভা করেন সর্বোচ্চ আদালতের উভয় উভয় বিভাগের বিচারপতিদের নিয়ে।
সে সভার পর গত শনিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাহী কমিটি, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গে মতবিনিময় বৈঠক করেন প্রধান বিচারপতি।
সে সভায় নিয়মিত বেঞ্চ চালুর বিষয়ে আলোচনার পর সোমবার ভার্চুয়াল বেঞ্চের পাশাপাশি নিয়মিত বেঞ্চ গঠন করে দিলেন প্রধান বিচারপতি।