সাভারের খাগান এলাকায় অবস্থিত সিটি ইউনিভার্সিটিতে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের গুলিতে সিফাত হোসেন (২৪) নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় মূলহোতা অভিযুক্ত বাপ্পীসহ চার জনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। এর আগে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারুক আহম্মেদ অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বাপ্পীকে প্রধান আসামি ও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। আটককৃত অপর তিনজন হলো- সোহেল (২৮), মোশারফ (২৬) ও বিটু (২৭)। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত বাকি সন্ত্রাসীদের আটকে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য বেসরকারি সিটি ইউনিভার্সিটি আগামী ১৭ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের মূল ফটকে এ বন্ধের নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে বেলা ১০টার মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টির ৪টি আবাসিক হলে থাকা সকল শিক্ষার্থীরা সকালেই তাদের মালপত্র গুছিয়ে হল ত্যাগ করে চলে যায়। অন্যদিকে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সিটি ইউনিভার্সিটি ও এর আশপাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হল ত্যাগের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, গত সোমবার দুপুরে প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সাভারের বিরুলিয়ার সিটি ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বাপ্পীর নেতৃত্বে টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হোসেনকে গুলি করে হত্যা করেছে বহিরাগত ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছেন। সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম জানান, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফারুক আহম্মেদ বাদী হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বাপ্পীকে প্রধান আসামি ও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে সাভার মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। এ মামলায় অভিযুক্ত বাপ্পী (২৪), সোহেল (২৮), মোশারফ (২৬) ও বিটু (২৭) নামে চার জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদেরকেও আটকের চেষ্টা চলছে। উল্লেখ্য, গত সোমবার দুপুরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়টির ইংরেজি বিভাগের ছাত্র বাপ্পীর নেতৃত্বে একদল বহিরাগত সন্ত্রাসী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় সন্ত্রাসীদের গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ৭ শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধসহ আহত হয় অন্তত ১৫ জন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় টেক্সটাইল বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হোসেন ও বাসুদেব মল্লিক নামের দুই শিক্ষার্থীকে মুমূর্ষু অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সিফাতকে মৃত ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাসুদেবকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় নিহতের সহপাঠী শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাসী হামলার বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাস থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সিএন্ডবি-আশুলিয়া সড়কের কলমা এলাকায় পৌঁছলে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা তাদের গতিরোধ করেন। এসময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়।