মো: মোস্তাফিজুর রহমান খান: নড়াইল জেলার কালিয়া থানাধীন বাবরা হাচলা ইউনিয়নের উড়শীতে পারিবারিক কলহের জেরে দিপালী বেগম (৩৫) নামে এক গৃহবধূকে স্বামী রকিবুল গাজী (৪০) মায়ের সামনে নির্মমভাবে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে।
গত ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ০৭:০০ ঘটিকার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে যানায় সিআইডি।
আজ বুধবার সিআইডি সদর দপ্তর আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য যানায় সিআডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর পিপিএম।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর যানান , ভিকটিম দিপালী উড়শী গ্রামের গাজী নিউ মডেল ফার্নিচার এর মালিক রকিবুল গাজীর স্ত্রী। ০৬ বছর পূর্বে ভিকটিমের সাথে আসামীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় আসামী যৌতুক হিসেবে নগদ ০৫(পাঁচ) লাখ টাকা নেয়। আসামি কিছুদিন পর আবার ১০(দশ) লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা তা দিতে অস্বীকার করে। এরপর থেকে ভিকটিমের উপর শুরু হয় অমানুষিক নির্যাতন।
ভিকটিমের মা তা জানতে পেরে মেয়ের সুখের কথা বিবেচনা করে বসতবাড়ি বিক্রয় করে ১০(দশ) লাখ টাকা যৌতুক প্রদান করে। এই টাকা দিয়ে আসামী বাড়ি, ফার্নিচারের দোকান, কাঠের ডিজাইন করবার মেশিন ক্রয় করে। এরপর আসামী পুনরায় ০৪(চার) লাখ টাকা দাবি করে। এই টাকা আদায়ের জন্য ভিকটিমের উপর পুনরায় নির্যাতন শুরু হলে ভিকটিমের মা বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য মেয়ের বাড়িতে আসে।পরবর্তিতে উক্ত বিষয় নিয়ে কলহের জের ধরে আসামি রকিবুল ভিকটিমের মা এর সামনে হাতুড়ি দিয়ে ভিকটিমের মাথায় আঘাত করলে মাথার খুলি ফেটে মগজ বের হয়ে যায়। আশেপাশের মানুষ চিকিৎসার জন্য পল্লী চিকিৎসককে ডেকে আনলে সে জানায় ভিকটিম মৃত্যুবরণ করেছে।
তিনি আরো যানান, এই নৃশংস হত্যাকান্ডটি স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় ব্যাপক আলোচিত হয়। বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর , পিপিএম এর সার্বিক দিক-নির্দেশনা ও তত্ত্বাবধানে হত্যাকান্ডের ছায়া তদন্ত শুরু করে সিআইডির এলআইসি বিভাগের একদল চৌকশ সিআইডি সদস্য।
পরবর্তীতে পলাতক আসামীর সম্ভাব্য লুকিয়ে থাকবার সকল স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সিআইডি । যার ধারাবাহিকতায় সিআইডি’র একটি চৌকস টিম আত্মগোপনকৃত পলাতক আসামী রকিবুল গাজী (৪০) কে সাভারের ধামসোনা হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে। স্বল্প সময়ে হত্যাকারীকে গ্রেফতার সিআইডি তথা বাংলাদেশ পুলিশের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।