Breaking news

বিটিআরসির বন্ধ সাইটগুলো খুললো কে?
বিটিআরসির বন্ধ সাইটগুলো খুললো কে?

বিটিআরসির বন্ধ সাইটগুলো খুললো কে?

মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে সম্প্রতি পর্নোসাইটসহ ৫০০টি ওয়েবসাইট বন্ধ করেছিল বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি)। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাহসী পদক্ষেপের জন্য সাধুবাদও পেয়েছিলেন বিটিআরসি ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তবে সম্প্রতি আবারও সাইটগুলো চালু হয়েছে। কোনো ধরনের প্রক্সি সার্ভার ছাড়া অবাধেই লগইন করা যাচ্ছে সাইটগুলো।
 
২০১৬ সালের ২৮ নভেম্বর ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফিসহ আপত্তিকর কনটেন্ট প্রকাশ ও সামাজিক অবক্ষয়ের জন্য দায়ী প্রায় ৫০০ ওয়েবসাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এ সিদ্ধান্তে শতভাগ সম্মতি ছিল প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমেরও। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি কমিটি গঠন করে পর্নো এবং বেট থ্রি সিক্সটি ফাইভের মতো অনলাইনে বাজি ধরা ও জুয়ার ৫০০ ওয়েবসাইট বন্ধ করেছিল বিটিআরসি। তবে এগুলো এখন অবাধেই অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে।
 
কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পর্নো সাইট বন্ধে মুঠোফোন অপারেটর, ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসটি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েসহ (আইআইজি) বন্ধের কার্যক্রম পরিচালনাকারী সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে একটি তালিকা পাঠানো হয়েছিল। কাজও হয়েছিল দুই মাস। কিন্তু এখন আবারো আগের দশা। সর্বশেষ ডিসেম্বরে বন্ধ করে দেয়া হয় ১২টি বেটিং ওয়েবসাইট। তবে এর মধ্যে ১১টি এখন অ্যাক্সেস করা যাচ্ছে।
 
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বন্ধ পর্নো সাইটগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কয়েকটি ওপেন হচ্ছে। ওয়েবসাইটের ট্রাফিক সম্পর্কে ধারণা দেয়ার নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান অ্যালেক্সাতে বাংলাদেশে ওয়েবসাইটগুলোর র‌্যাংকিং অনেক কমে এসেছে। অর্থাৎ ওয়েবসাইটগুলোতে বাংলাদেশ থেকে হিট পড়ছে বলেই জানায় অ্যালেক্সা।
 
ওয়েবসাইটগুলো বন্ধের আগে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছিলেন, ইন্টারনেটে পর্নোগ্রাফি ও আপত্তিকর কনটেন্টের সহজলভ্যতা অপ্রাপ্তবয়স্কসহ সব নাগরিকের ওপর সামাজিকভাবে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করছে। তাই বন্ধ করা হচ্ছে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে দুই মাসের মধ্যেই কীভাবে খুললো সাইটগুলো? 

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে পাঁচবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও উত্তর পাওয়া যায়নি।

বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী, ২০১৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৬৯ লাখ। তবে রাজধানীর স্কুলগামী শিশুদের প্রায় ৭৭ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত বলে এক গবেষণায় জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন।  
 
জানতে চাইলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, বন্ধ সাইটগুলো ওপেন হচ্ছে কিনা জানি না। তবে বন্ধের আগে আমরা জানিয়েছিলাম এগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়নি। হতে পারে বন্ধ সাইটগুলো অন্য নামে, অন্য প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার করেছে বলেই আবারও দেখা যাচ্ছে। 
 
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, নানা কারণে সমাজের অবক্ষয় হচ্ছে। পর্নো সাইটগুলোও তার একটি নিয়ামক। সাইটগুলো বন্ধের বিষয়টি অত্যন্ত প্রশংসনীয় ছিল। যদি আবারও খুলে দেয়া হয় তাহলে মনে করি সরকার দ্বিধায় ভুগছে।   
 
তবে এ ধরনের সাইট বন্ধ না করে প্রকৃত শিক্ষা প্রদানের দিকে জোর দেয়ার আহ্বান জানান ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম। 

তিনি বলেন, বন্ধ করার পর এর প্রতি মানুষের কৌতূহল বেড়েছে। কারণ মানুষের নিষিদ্ধ বিষয়ের প্রতি বেশি আকর্ষণ থাকে। এটা আমাদের শিক্ষার বিষয়, যে আমরা এটা দেখবো না। 

Published: 2021-06-25 15:26:40   |   View: 1383   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow