Breaking news

মৎস্য ভান্ডার রক্তদহ বিল কচুরিপানার দখল-দূষণে
মৎস্য ভান্ডার রক্তদহ বিল কচুরিপানার দখল-দূষণে

মৎস্য ভান্ডার রক্তদহ বিল কচুরিপানার দখল-দূষণে

* মরে যাচ্ছে দেশি প্রজাতির মাছ * বেকার দুই হাজার জেলে * খেয়াঘাট বন্ধে ১১ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ চরমে সংস্কারের অভাব, অবৈধ দখল, কচুরিপানা ও আগাছা আবর্জনার কবলে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহবিলের মৎস্য সম্পদ জীববৈচিত্র্য বিপন্ন হতে চলেছে। মৎস্য ভা-ার হিসেবে পরিচিত ও ইতিহাস ঐতিহ্যে ভরপুর এই  বিলের অস্তিত দিন দিন বিলন হয়ে গেলে ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিলটি রক্ষাণাবেক্ষণের কোন উদ্যোগ নেই। অযত্ন অবহেলা এই বিলের ঐতিহ্যে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিগত কয়েক বছর ধরে কচুরিপানার আধিক্যে বিলের মৎস্য সম্পদ একে বারে বিলন হতে চলেছে। বিলের বিশাল জলরাশি কচুরিপানায় ছেয়ে গেছে। কোথায় সমন্যতম জায়গাও খালি নেই। কচুরিপানার আবর্তে বিলে জন্ম নেওয়া দেশী নানা প্রজাতির মাছ গুলো মরে যাচ্ছে। জেলেরা জাল ফেলে বিলে মাছ ধরতে পারছে না। ফলে ভরা মৌসুমেও বিল পাড়ের প্রায় ২ হাজার মৎস্যজীবীদের চরম দূর্দিন যাচ্ছে।বিল পাড়ের সান্দিড়া জিয়ানি পাড়ার মোবারক হোসেন, গেদা মাঝি, আবদুর রহমান, জহুরুল মুন্সি, আব্বাস আলী এবং প্রসাদ খালী জেলে পল্লীর মুক্তি হালদার, অনুকূল হালদার, কালিপদ হালদার, কানু হালদার সহ অন্যান্য মৎস্যজীবীরা জানান বাপ দাদার আমল থেকে আমাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন ছিল এই রক্তদহ বিল। এক সময় এই বিলে মাছ ধরে বাপ দাদারা সুখে স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করেছে। বংশ পরম্পরায় আমরা ও পৈত্রিক পেশা অাঁকড়ে ধরে আছি। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেই সুখ স্বাচ্ছন্দ আর নেই। তারা বলেন এই বিলে আর সারা বছর পানি থাকে না। মাছ ও তেমন পাওয়া যায় না। বছরে তিন থেকে চার মাস বিলে মাছ ধরে আমরা কোন রকমে টিকে আছি। বিল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে বছরে অধিকাংশ সময়ই আমাদের বেকার জীবনযাপন করতে হয়। তারা আরও বলেন বিগত ২/৩ বছর ধরে বিলে ব্যাপক হারে কচুরিপানা জন্মাচ্ছে। কচুরিপানা পরিষ্কার না করার কারণে এগুলো দিন দিন সমস্ত বিল ছেয়ে গেছে। কচুরিপানার প্রভাবে বিলে নৌকা চালানো যাচ্ছে না এবং মাছ ও ধরা যাচ্ছে না। কচুরিপানার প্রভাবে বিলে সমস্ত মাছ দিন দিন মরে যাচ্ছে। এদিকে কচুরিপানার কারণে বিলের বোদলা- সান্দিড়া খেয়া ঘাট একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এতে করে নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার বোদলা , পালসা, তেবাড়িয়া, বিলকৃষ্ণপুর, ধুপাপাড়া, বানিয়া পাড়া, সরকাটিয়া, নিমগাছি, ঝালঘড়িয়া, বড়গাছাও বামুনিয়া গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। ওই ১১ গ্রামের এই বিপুল জন গোষ্ঠী এই খেয়া ঘাট পাড়ি দিযে প্রতিনিদিন সান্তাহার শহর ও নওগাঁ জেলা শহরের যাতায়াত করে থাকেন। প্রায় ৬০ বছরের এই খেয়া ঘাট কচুরিপানার কারণে বন্ধ হয়ে যাওয়া তারা প্রায় ১০ কিলো মিটার পথ ঘুরে শহরে যাতায়াত করছে। বোদলা গ্রামের মাসুদ, সিরাজ, মদ্দি, ছাবের আলী, ও সাইদুর মহরি সহ ওই এলাকার সচেতন জনগোষ্ঠী জানান তাদের হাটবাজার ও দৈনন্দিন নানা প্রয়োজনে বগুড়ার সান্তাহার শহর ও নওগাঁ জেলা শহরের প্রায় প্রতিদিন যেতে হয়। কিন্তু রক্তদহ বিলের খেয়া ঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে রানীনগর দিয়ে তাদের যাতায়াত করতে হচ্ছে। এতো করে তাদের যাতায়াত খরচ হচ্ছে দিগুনেরও বেশি। সময় লাগছে অনেক। তারা অবিলম্বে বিলের কচুরিপানা নিধন করে মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও খেয়া ঘাট চালু করার জন্য জোর দাবি জানান। একই সঙ্গে তারা এই বিশাল জন গোষ্ঠীর দুভর্োগ লাগবের জন্য এই বিলের ওপর একটি ব্রিজ নির্মানে দাবি জানান।এ বাপ্যারে আদমদীঘি উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, রক্তদহ বিলের কচুরিপানার পরিস্কার করার মতো লোকবল বা অর্থবরাদ্দ আমাদের হাতে নেই। তাছাড়া বিশাল বিলের কচুরিপানা পরিস্কার করাও সম্বব তবে আমরা এব্যারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। অর্থ বরাদ্দ হইলে কচুরিপানা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Published: 2021-06-29 08:51:21   |   View: 1434   |  
Copyright © 2017 , Design & Developed By maa-it.com



up-arrow